স্থানীয় সূত্র জানায়, জাতুয়া-পালপুর সড়কের কাজে দ্বিতীয় প্যাকেজে মুনিরজ্ঞাতি, মানিকগঞ্জ ভায়া পালপুর সড়কে প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে চার কিলোমিটার ২০০ ফুট রাস্তার মাটি কাটা, গাইডওয়াল ও আরসিসি উন্নয়ন কাজ পায় হাসান এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে ধলাই খালে সেতুর অভাবে ১৫ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ
স্থানীয়দের অভিযোগ, তিন নম্বর ইট দিয়ে গাইডওয়াল, ভিট মাটি দিয়ে গাইডওয়ালে গাঁথুনি ও গাইড ওয়ালের নিচের ঢালাই কাজে তিন ইঞ্চির পরিবর্তে দুই থেকে আড়াই ইঞ্চি করা হচ্ছে। এছাড়াও সড়কের দুপাশে তিন ফুট করে মাটি ভরাট করার কথা থাকলেও দেড় থেকে দুই ফুট করে ভরাট করা হচ্ছে। মাটি ভরাট কাজে স্লোপ না থাকায় একটু বৃষ্টির পানিতে তা ধসে রাস্তা ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বালু, পাথর ও সিমেন্টের মিশ্রণে পুকুর চুরির অভিযোগও স্থানীয়দের। প্রথম দিকে চার বস্তা পাথর, বালু দুই ও এক বস্তা সিমেন্ট দিয়ে মসলা মিশ্রণ করা হলেও এখন পাথর ছয়, বালু চার ও এক বস্তা সিমেন্ট দিয়ে মিশ্রণ করে দায়সারাভাবে কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
আরও পড়ুন: হাওরে পানি আটকে মাছ শিকার, সুনামগঞ্জে বোরো আবাদে শঙ্কা
এ বিষয়ে মহব্বতপুর গ্রামের আবুল বাসার মুন্না, আজিজুর রহমান আজিজ ও ওয়াহিদুল হক বলেন, গ্রামের আব্দুল কাদির ও উমর আলীর বাড়ির সামনেসহ একাধিক স্থানে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ফাঁটল ধরেছে। চলমান ঢালাই কাজ শেষ না হতেই ফাঁটল ধরে ঢালাই বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ কাজে পুকুর চুরি চলছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কাজ বন্ধ করে দিতে বলেছেন।
আরও পড়ুন: সংস্কারের অভাবে ‘মরণ ফাঁদ’ সরাইল-অরুয়াইল সড়ক
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ড্রিম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সাইট ম্যানাজার পরিচয়ে আতিকুল ইসলাম নামে একজন প্রথমেই এ প্রতিবেদকের ক্যামেরা বন্ধ করে কথা বলার জন্য হুমকি দেন। এক পর্যায়ে ক্যামেরা কেড়ে নেয়ার জন্য তিনি এগিয়ে আসেন। কিছুক্ষণ পর তার মুঠোফোন এগিয়ে দিয়ে আব্দুল খালিক নামে স্থানীয় প্রভাবশালী এক আওয়ামী লীগ নেতার নাম উল্লেখ করে কথা বলার জন্য বলেন। কিন্তু তাকে এ প্রতিবেদকের মুঠোফোনে কল দেয়ার কথা বলায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষের লোকজন চরম উত্তেজিত হয়ে পড়েন।
পরে অপর প্রান্তে হাসান এন্টারপ্রাইজের পক্ষে সাইট ম্যানজার পরিচয়ে নাম উল্লেখ না করে একজন বলেন, ‘আমরা নিয়ম অনুযায়ী কাজ করছি। স্থানীয় লোকজন কাজ তদারকি করছেন।’
আরও পড়ুন: ১০ কিলোমিটার সড়ক যেন বিষফোঁড়া!
এ ব্যাপারে দক্ষিণ খুরমা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মছব্বির বলেন, ‘পুকুর চুরির মতো ঘটনা ঘটছে। কাজ না করার জন্য বলেছি। আমরা প্রয়োজনে নির্বাহী প্রকৌশলী এলজিইডি সুনামগঞ্জ বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করব।’
এ ব্যাপারে ছাতক উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আবুল মুনসুর মিয়া বলেন, ‘গত ২১ জানুয়ারি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। সড়কের কাজ সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে।’